চরম প্রতিশোধ

😀😀চরম প্রতিশোধ😀😀 ছাত্র জীবনে একদিন এক নোয়াখাইল্যা মেয়ে টুম্পা আমায় বলে বসলো তোমাকে ছাড়া আমি বাচঁবোনা। জিজ্ঞেস করলাম,কিসের জন্য? বললো,তা বলতে পারবে না তো এখন আমায় কি করতে হবে? বললো সময় দিবা,প্রচুর সময় দিবা আমাকে,কাছে কাছে থাকবা। বললাম তাহলে একটা হাতঘড়ি কিনে দিতে হবে আমায়। টুম্পা তায়ই করলো,আমায় একটা হাত ঘড়ি কিনে দিলো, ফড়িংয়ের মত উড়তেছিলাম দু'জনে, কলেজের ঝালমুড়িওয়ালা,ফুসঁকাওয়ালা এমনকি ডাবওয়ালাও আমাদের খুব চিনতো। আমাদের কোনদিন কাউকে একা দেখলে তারা খুব আফসোস করতো, আমরাই তাদের উল্টো শান্তনা দিতাম। দেখতে দেখতে আমাদের লেখাপড়া শেষ হয়ে গেল, একদিন টুম্পার বাবা এসে হুট করে টুম্পাকে ঢাকা থেকে নিয়ে গেল নোয়াখালী গ্রামের বাড়িতে। আমিও হোস্টেল ছেড়ে উত্তরায় চলে এলাম এক ছোট কোম্পানির ম্যানেজার হয়ে। এখন টুম্পার সাথে দেখা না হলেও নিয়মিত কথা হয় রাত ১২ টার পরে। একদিন ও বললো তাদের পরিবার থেকে ছেলে খোঁজা হচ্ছে। কিছুটা চিন্তিত হলাম, সেইই দেখি উল্টো আমায় শান্তনা দিয়ে বললো,টেনশন করোনা, আমি টুম্পা নোয়াখালীর মাইয়া,যা চাই তাই করতে পারি। তার আগে একটা কাজ করতে হবে তোমায়, বললাম, বলো কি কাজ? পোস্টিং নিয়ে নোয়াখালীতে চলে এসো, ইমিডিয়েট বসকে তদবির করে সেটাও সম্ভব করলাম, এখন হবু শ্বশুরের এলাকার লোক আমি,শক্তি সাহস দুটোই ফিল করছি, টুম্পার বাপের ছিল বড় মাপের মুদি ব্যবসা,বাপের সাথে দুই পোলাও ব্যবসাতে সময় দেয়। আমি ওগোর দোকানেই বাকিবাট্টা খাই,বুঝতেই দিইনি ওগোর মেয়ের জন্যই ঢাকা ছেড়ে এই মফস্বলে আসা আমার। সব ঠিকঠাক চলছিল, একদিন টুম্পা আমায় বিকেলে নোয়াখালী পৌরসভার সামনে দেখা করতে বললো, বললাম ওখানে তো কোন কাজী অফিস নেই। বললো,আগে আসো অন্য কথা আছে। হালকা চিন্তিত হলাম। সময় মত গেলাম পৌরসভার সামনে,কাছেই নিরিবিলি একটা জায়গা দেখে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসলাম ওর পাশেই। সে যা বললো তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না মোটেও। বললো,আমাদের সম্পর্ক আর কন্টিনিউ করা সম্ভব না, কেন? বাবা তোমায় মানবে না। কেন কালো বলে? তা না,যে ছেলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসছে সে তো আরোও কালো,কিন্তু বিসিএস ক্যাডার। তাহলে? বাবা মনে হয় অত দুরে আমায় বিয়েও দিবে না, তাছাড়া বাবা প্রায় বলে কুষ্টিয়া মেহেরপুর এলাকা নাকি ডাকাইতের এলাকা। লোকজন নাকি ভিষণ বদরাগী,কথায় কথায় বউ পেটায়। তাই তোমার কথা বাবার সামনে বলতেই পারিনি। বাবু তুমি আজ থেকে ভালো থেইকো,নিয়মিত খাওয়া দাওয়া কইরো, আল্লাহ হাফেজ! ওরে শালা! আমারে টাকা খরচ করাইয়া পোস্টিং বদলিয়ে নোয়াখালীতে আইন্না এখন পল্টি মারলা! ছাড়বো না তোমায় টুম্পা,তোমার বাপকেও না। চুপচাপ রুমে ফিরে এসে ভাবতে থাকলাম কি করা যায়। পরের দিন টুম্পার বাপের মুদী দোকানে গেলাম এক কোম্পানির প্রতিনিধি সেঁজে। উনারা বাপ-পুত কেউ আমায় আগে থেকে চিনতেন না, নিরিবিলিতে বসে সবিস্তর আলাপ করে রাজি করিয়ে ফেললাম টুম্পার বাপরে। বললাম,আংকেল আপনি যদি এই এলাকা থেকে সয়াবিন তেলের খালি বোতল ম্যানেজ করে দিতে পারেন পার কেজি বোতল আমরা ৫ হাজার টাকা দরে আপনার কাছ থেকে কিনে নেবো। অগ্রিম দু'কেজি বোতলের দাম ১০ হাজার টাকা দিয়ে গেলাম। আংকেল ধাপ করে আমার হাত চেপে ধরে বললো, বাবা,তুমি আমার ছেলের মত,তোমার কাছে একটা অনুরোধ, তুমি আশপাশের মুদী দোকানগুলোতে আপাতত এ নিউজটা দিওনা। মেয়ের একটা ভালো ঘর থেকে সমন্ধ আসছে, খরচাপাতির একটা ব্যপার আছে,আমাকে মাত্র ২০ দিন সময় দাও আমি তোমাকে ৫০ কেজি সয়াবিন তেলের খালি বোতল ম্যানেজ করে দেবো। বললাম,আংকেল হাতটা ছাড়েন,আমি আপনার ছেলের মতই তো,আপনার কথা অবশ্যই রাখবো, আপনাকে ২০ দিন নয়,১ মাসের সময় দিলাম, ১ মাস পরে না হয় আপনার আশেপাশের দোকানগুলোতে জানাবো এটা শুনে আংকেল তো কাচ্চি না খেয়ে আমাকে আসতেই দিবে না। খেয়েদেয়ে রুমে ফিরে ক'টা জামাকাপড় ব্যাগে ঢুকিয়ে রাতের গাড়ীতেই ঢাকার পথ ধরলাম। সাথে দীর্ঘদিনের দিনের ব্যবহৃত সীমটা খুলে ছুড়ে মারলার চলন্ত গাড়ীর জানালা দিয়ে। ১৫ দিন পর এক পরিচিতজনের কাছ থেকে খবর নিলাম, বললো,আংকেলের মুদী দোকান এখন বন্ধ, কেউ বসে না। বুঝলাম,বাপ পুত সবাই এখন বোতল কুড়ানোতে ব্যাস্ত। ২৫ দিন পর খোঁজ নিয়ে পেলাম কাঙ্খিত একটা দুঃসংবাদ। আংকেলের গর্ব করা মেয়ে টুম্পার সমন্ধ ভেঙ্গে গেছে, মেয়ের বাপ ভাই সবাই সয়াবিন তেলের খালি বোতল কুড়ায় শুনে ছেলে পক্ষ আর যোগাযোগ রাখেনি, আমিও ফালতু চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে কাজে মনোযোগী হয়েছিলাম।😂😂😂

Comments

Popular posts from this blog

Goat Farming in Bangladesh || বাংলাদেশে ছাগল পালন ।। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন || Black Bengal Goat Farming

পাহাড়ের টানে খাগড়াছড়ি-সাজেক || সাজেক ভ্রমণের বৃত্তান্ত