সন্দেহ

বউ নিয়ে প্রচুর বিপদে আছি। এতো সন্দেহ করে আমাকে। সেদিন কলিংবেল টিপলাম। দরজা খুলে দিল বউ। ঢুকতেই বউ বাঁধা দিল। শার্টের গন্ধ শুঁকে বলল, - তুমি সিগারেট টেনেছ? - না তো। তুমি জানো আমি সিগারেট টানি না। - শার্টে গন্ধ পাচ্ছি। - আরে গন্ধ পেলেই আমি টানছি এমন নাকি! বন্ধুরা টানসে। ওদের সিগারেটের ধোঁয়া শার্টে লাগসে। - তাই নাকি? সত্যি তো? - সত্যি রে বাবা। - আচ্ছা। পরের বার আড্ডা শেষে পারফিউম দিয়ে ঘরের কলিংবেল বাজালাম। এবার আর সিগারেটের গন্ধ পাওয়া যাবে না। কিন্তু বউ এবারো বাঁধা দিল। - কি ব্যাপার কোন মেয়ের সাথে ডেটিং করলা? - আরে আশ্চর্য মেয়ে কোথায় পাব? বউ থাকতে অন্য মেয়ে লাগে নাকি! - তো এত দামী পারফিউম দিয়েছ কেন? পারফিউম ছেলেরা কখন দেয় আমি জানি না নাকি? আর তুমি তো বদের হাড্ডি... অতঃপর চেঁচামেচি শুরু। মেয়েরা এতো চেঁচাতে পারে কেমতে? এরপর তুলা পকেটে রাখব। চেঁচানো শুরু করলেই কানে তুলা দিব। তারপর থেকে অফিস শেষে সোজা বাসায় আসলাম। তাতেও বউয়ের সমস্যা। - কি ব্যাপার আজ পারফিউমের গন্ধ নেই, সিগারেটের গন্ধ নেই। অন্য কোথাও ছিলে নিশ্চয়। - কি বলছ এসব? অফিস না করে কোথায় থাকব? - কোথায় থাকবে তা আমি কেমনে বলব? থামো খলিল সাহেবকে জিজ্ঞেস করি। বউ কল দিল খলিল সাহেবকে। বউ এমনভাবে কথা বলল যে খলিল সাহেব বুঝতেই পারল না বউ আমাকে সন্দেহ করে। - খলিল সাহেব ভালো আছেন? - জ্বী ভাবী ভালো। আপনি কেমন আছেন? - জ্বী ভালো। ভাবীর খোঁজ নেওয়ার জন্য কল দিলাম। কিছুদিন পর মা হবেন তো উনি। - আপনাদের দুয়া। নিজের প্রতি এখন খুব সচেতন সে। - আপনিও নিজের শরীরের খেয়াল রাখবেন। আমার বর তো কথা শোনে না। ভাজা পোড়া খেয়ে পেটের বারটা বাজিয়েছে। আজ সকাল থেকে উনার পাতলা পায়খানা। - তাই নাকি? অফিসে তো ভালোই মনে হলো। আজ তো মিটিং সিটিং নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম আমরা। - ঔষধ খাইয়ে পাঠিয়েছিলাম তো তাই। আচ্ছা ভালো থাকবেন। ভাবীর যত্ন নেবেন। - আচ্ছা। বউ ফোন রেখে দিয়ে আমার দিকে দুঃখিত ভঙ্গিতে তাকালো। আমি একটু ভাব নিয়ে মুখে গাম্ভীর্য এনে বললাম, - বিশ্বাস হল এবার? - সরি গো। বেশি ভালবাসি বলে সন্দেহ করি বেশি। - এত সন্দেহ ভালো না। - আচ্ছা আর সন্দেহ করব না। তবুও সে সন্দেহ করে। দুটা শাড়ি কিনলে বলবে, আরেকটা শাড়ি কার জন্য? রান্নার প্রশংসা অবশ্যই করতে হবে। সেটা ভাল রান্না হোক বা খারাপ রান্না হোক। নাহলে বলবে, ❝এখন তো আমার হাতের রান্না ভালো লাগবে না। কোন মেয়ের রান্না খাও কে জানে।❞ বেশ কিছুদিন পরের ঘটনা। বউ আমার এক্সিডেন্ট করেছে। হাসপাতালে ভর্তি করালাম। ২৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেল বউয়ের হুঁশ নেই। এদিকে বউয়ের টেনশনে রাতে আমার ঘুম হই নি। তো ঘটনা ঘটল রাত নয়টায়। আমি বাথরুমে ফ্রেশ হচ্ছি। আমার মোবাইল বাজছিল। বউয়ের বেডে আমার মোবাইল। বের হয়ে মোবাইল হাতে নিলাম। Nadia calling... নাদিয়া আমাদের জুনিয়র অফিসার! - হ্যালো নাদিয়া বলো। - স্যার একটা জরুরি ফাইলে আপনার সাইন লাগবে। আপনি তো অফিস আসছেন না। আমি কি ফাইলটা আপনার কাছে নিয়ে আসব? - না আসা লাগবে না। আমি কালকে আসব। - ওকে স্যার। কল কেটে দিয়ে ঘুরে দেখি বউয়ের জ্ঞান ফিরেছে। খুশিতে আমার বাকবাকুম অবস্থা। বউ আমাকে ইশারায় কাছে ডাকছে। আমি কাছে গেলাম। মনে হয় আমাকে কিছু বলতে চায়। ঠোঁট নড়চড় করছে। আমাকে আরো কাছে নিয়ে কানে ফিসফিস করে বলল, - কাল কোথায় যাবা? নাদিয়া কে? - 😮 রম্য গল্পঃ সন্দেহ –Rj Kuber Majhi #হালাল_বিনোদন

Comments

Popular posts from this blog

Goat Farming in Bangladesh || বাংলাদেশে ছাগল পালন ।। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন || Black Bengal Goat Farming

পাহাড়ের টানে খাগড়াছড়ি-সাজেক || সাজেক ভ্রমণের বৃত্তান্ত